রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ):
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরাঞ্চলে মাছের অভাব দেখা দিয়েছে। হাওরে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে বলে অনেকে জানান। জেলার ১১টি উপজেলা ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, দিরাই, শাল্লা, দক্ষীণ সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুরসহ প্রায় সব কয়টি উপজেলায় ছোট বড় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা রয়েছে। এ সকল এলাকায় দেশীয় মাছ বিলুপ্তির মুখে। এখন হাওরে পাওয়া যায় না দেশি মাছ, যেমন-রুই, কাতলা, বোয়াল, শৈল, গজার, কৈ, শিং, পুটি, টেংরা, রানী মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন উপজেলায় ইজারাকৃত জলমহাল মালিকরা বিল শুকিয়ে মাছ ধরে শহরে বেশিমূল্যে বিক্রয় করেন। আর যে সব জলাশয় রয়েছে সেই সকল জলাশয়ে মাছের অকাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ। ধর্মপাশা উপজেলার মৎস্যজীবী মোঃ গেদু মিয়া জানান, মৎস্য শিকার করে পরিবার চালাই। গত দুই মাস যাবৎ আমরা দেশি মাছ পাই নি। বাজারে গিয়ে পাঙ্গাস মাছ কিনতে হয়।
এ ব্যাপারে মধ্যনগর থানার মৎস্যজীবী মোঃ সোনা মিয়া বলেন, মৎস্য শিকার করে দিন চালাই এখন মাছ নেই আয় করার পথ খুঁজে পাইনি। তাহিরপুর উপজেলার মৎস্যজীবী মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মাছ আর ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ বলা হত এখন শুধুমাত্র ধান আছে কিন্তু মাছ নেই বলে তিনি জানান। গত ২ মাছ যাবৎ দেশীয় প্রজাতির মাছ খাওয়া হল না।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার জামাল হোসেন বলেন, পাহাড়ী ঢলে আমাদের নদী, খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদী ও খাল বিল শুকিয়ে গেছে তাই মাছ পাওয়া যায় না।
জামালগঞ্জ উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তি আব্দুল মুকিত মাস্টার বলেন, মাছ ছাড়া ভাত খাইনি কোন দিন, আজ মাস দুয়েক হয়ে গেলে দেশীয় মাছ খাওয়া হল না। এর প্রধান কারণ বিলগুলো শুকিয়ে মা মাছগুলো শিকার করে বিক্রয় করা হয়, যার দরুণ অকালে মাছে অভাব দেখা দিয়েছে। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, হাওরে মাছের অভাব হয়েছে তা আমি শুনেছি। প্রধানত দুটি কারণ মনে হয়েছে, একটি হল নদী বা বিল ভরাট, অন্যটি হল বিল শুকিয়ে মা মাছ শিকার। যে কোন ব্যাক্তি যদি শুকিয়ে মাছ ধরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অচিরেই নদী ও বিল খনন করা হবে বলে তিনি জানান।